আপেল সাইডার ভিনেগার এর বিশেষত্ব | আপেল সাইডার ভিনেগারের অপকারিতা

 

এক নজরে দেখে নিন আপেল সাইডার ভিনেগার উপকারী নাকি ক্ষতিকর?



আপেল সাইডার ভিনেগার একটি বহুল জনপ্রিয় পানীয়। গাজন করা আপেলের রস দিয়ে তৈরি করা হয়ে থাকে এই আপেল সাইডার ভিনেগার। এটি বিভিন্নভাবে খাওয়া হয়। বিশেষ করে খাবার ড্রেসিং, ম্যারিনেট, এবং বিভিন্ন আচার তৈরিতে এটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। সম্প্রতি কিছু গবেষণাতে বলা হয়েছে যে, আপেল সাইডার ভিনেগারে রয়েছে বেশ কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা। যে কারণে মানুষের চাহিদা বেড়ে চলেছে ব্যাপক হারে। চলুন দেখে নেয়া যাক আপেল সাইডার ভিনেগার এর কিছু বিশেষত্ব।

আপেল সাইডার ভিনেগার এর উপকারিতা

হাইপারলিপিডেমিয়া নিয়ন্ত্রণ করে

নিয়মিত আপেল সাইডার ভিনেগার সেবন করার ফলে খারাপ কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বিশেষভাবে কমাতে সাহায্য করে থাকে। চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা এখনো পর্যন্ত নিশ্চিত নয় যে, কিভাবে এটি কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। কিন্তু তারা এর ব্যবহারের ফলে মানুষ ও প্রাণী শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানোর বিষয়টি লক্ষ্য করেছেন।এবং সেটি পরীক্ষামূলকভাবে প্রমাণিত করেছেন।

এন্টি মাইক্রোবিয়াল সুবিধা প্রদান করে

প্রাচীন আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে আপেল সাইডার ভিনেগার দিয়ে জীবাণু রোধের কাজে ব্যবহার করা হতো। কিন্তু সম্প্রতি বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, এটি E.coli এর মত ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধে বিশেষ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে অনেক।বিশেষজ্ঞের মতে E.coli ভাইরাস প্রতিরোধে আপেল সাইডার ভিনেগার ওষুধের মত কাজ করে। তবে তারা এটিও উল্লেখ করেছেন যে, এই ভাইরাস সংক্রমণ কমানোর জন্য আপেল সাইডার ভিনেগার একমাত্র সমাধান হতে পারে না।


 

ওজন কমাতে সাহায্য করে

যদিও আপেল সাইডার ভিনেগার এর সাথে ওজন কমানোর পরোক্ষ কোন সম্পর্ক নেই। তবুও চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা এটি প্রমাণ করেছেন যে, নিয়মিত আপেল সাইডার ভিনেগার পান করার ফলে গ্যাস্ট্রিক দেরিতে খালি করা, চর্বি ঝরানো ,গ্লুকোজের ব্যবহার বৃদ্ধি সহ শরীরে আরো বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে থাকে। যা প্রত্যক্ষভাবে ওজন কমাতে সাহায্য করে থাকে। তবে এর জন্য ব্যায়াম অথবা স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ বাদ দিয়ে যদি শুধু আপেল সাইডের ভিনেগার পান করেন এতে কোন উপকার হবে না। ওজন কমানোর জন্য আপনাকে অবশ্যই শারীরিক ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। সেই সাথে যদি আপনি আপেল সাইডার ভিনেগার পান করেন তাহলে আপনার কাজ দ্রুত হবে।

আরো পড়ুন জানলে আপনিও সকালে খালি পেটে পানি পান করবেন!

আপেল সাইডার ভিনেগারের অপকারিতা

যদিও আপেল সাইডার ভিনেগার নিয়মিত পান করার ফলে শরীরে বেশ কিছু উপকার হয়। তবুও এর রয়েছে কিছু পরিমাণে অপকারিতা বা স্বাস্থ্য ঝুঁকি। উচ্চমাত্রায় অম্ল থাকার জন্য যেসব মায়েরা আছে গর্ভবতী অথবা বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন এমন অবস্থায় আপেল সাইডার ভিনেগার পান করা অত্যন্ত ক্ষতিকর। এছাড়াও গবেষণায় এটি প্রমাণ করেছে যে ঘন ঘন আপেল সাইডার ভিনেগার পান করার ফলে দাঁতের এনামেল ক্ষয় হতে থাকে। তবে পরোক্ষভাবে কোন মানুষের ক্ষেত্রে এমন সত্যতা এখনো দেখা যায়নি। তবে আপেল সাইডার ভিনেগার যতটা সম্ভব পাতলা করে খাওয়া উচিত এতে নিরাপদ হয়।

আপেল সাইডার ভিনেগার অতিরিক্ত পান করার ফলে অনেক সময় বদহজম হতে পারে। অথবা বমি বমি ভাবের মত সমস্যা দেখা দিতে পারে। কেননা এটি অন্যান্য খাবারের মতোই জৈব স্বতন্ত্র। তাই আপেল সাইডার ভিনেগার খাওয়ার ফলে এমন ধরনের সমস্যা দেখা দিলে অবশ্যই এটি খাওয়া বন্ধ করে দিতে হবে। এবং পরবর্তীতে যদি খাওয়া হয় তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খেতে হবে। এছাড়াও আপেল সাইডার ভিনেগার খাওয়ার ফলে অনেক সময় শরীরে জ্বালা জ্বালা ভাব অনুভূত হতে পারে। এর কারণ হলো আপেল সাইডার ভিনেগারে উচ্চমাত্রায় অম্লতা রয়েছে। তবে এটি খাওয়ার আগে যতটা সম্ভব পানি মিশিয়ে পাতলা করে খাওয়া উচিত তাহলে আর এই সমস্যা হবে না।

আপেল সাইডার ভিনেগার খাওয়ার নিয়ম।

আপেল সাইডার ভিনেগার অনেকে তাদের রুচি সম্মত করে তৈরি করে খায়। তবে এটি কড়া করে খাওয়া কখনো উচিত নয়। এক চামচ আপেল সাইডার ভিনেগার এক গ্লাস পানিতে মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে শরীরের উপকার বেশি হবে। এটি খাওয়ার ১৫ থেকে ২০ মিনিট আগে পান করতে পারেন। এতে সঠিক উপকারিতা পাবেন আপেল সাইডার ভিনেগারের।

বন্ধুরা আমাদের আজকের পোস্টটি এই পর্যন্তই। আশা করি আপেল সাইডার ভিনেগার এর বিশেষত্ব সম্পর্কে আপনারা একটু হলেও জানতে পেরেছেন। এতক্ষণ কষ্ট করে লেখাটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। ভাল লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।


Post a Comment

Previous Post Next Post