জেনে নিন রোজা রেখে পাকা কলা খাওয়ার উপকারিতা Know the benefits of eating ripe bananas while fasting

 

রোজায়  পাকাকলা খাচ্ছেন তো ? জেনে নিন রোজায় পাকা কলা খাওয়ার উপকারিতা



সামনেই রমজান মাস।  সারাদিন রোজা রাখার পর শরীর ভীষণ ক্লান্ত ও দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই এই মাসে খাবার-দাবারের বিষয়ে একটু বেশি গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন। বিশেষ করে রমজান মাসের রোজা রেখে আপনি কি খাচ্ছেন তার উপর অনেক কিছুই নির্ভর করে। কেননা এই মাসে আপনার সুস্থতার বিষয়টি সব থেকে আগে। শরীরে ঠিকমতো পুষ্টি ঘাটতি পূরণ করতে না পারলে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে। যে কারণে অনেকেই প্রথম কয়েকটি রোজা রাখার পর আর রোজা রাখতে পারে না ।

রোজায় যা খাচ্ছেন, তা নিরাপদ তো?

অনেকেই আছে ইফতারে ভাজাপোড়া ভারী মসলাদার জাতীয় খাবার খেয়ে বিভিন্ন সমস্যায় ভোগে। পেটে জ্বালাপোড়া, অস্বস্তি, বদহজম, গ্যাস্ট্রিক সহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয় এইসব খাবার খাওয়ার ফলে। কিন্তু একবারও কি ভেবে দেখেছেন? শরীরকে সুস্থ রাখতে আপনি কি সঠিক খাবার খাচ্ছেন তো ? রমজান মাসের ইফতারি এবং সেহরিতে খেতে হবে পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর খাবার। কেননা এই মাসে  শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য এই খাবারের বিকল্প নেই।

আরো পড়ুন গরমে যে কারণে তরমুজ খাবেন 

রোজায় পাকা কলা খাওয়ার উপকারিতা

শরীরের জন্য পুষ্টিকর খাবারের তালিকা প্রথম দিকেই থাকে বিভিন্ন ফলের নাম। যার মধ্যে অন্যতম হলো কলা। বিশেষ করে অল্প খরচে বেশি পুষ্টি এবং কম সময়ের ভিতরে শক্তি যোগানোর কাজে কলা ভীষণভাবে কার্যকরী। একটি পাকা কলার ভিতরে রয়েছে মিনারেল, ভিটামিন ও ফাইবার। যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত দরকারি উপাদান। এছাড়া কলাতে প্রচুর পরিমানে পটাশিয়ান রয়েছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল যে একটি মাঝারি মাপের কলাতে গড়ে প্রায় 400 মিলিগ্রাম পটাশিয়াম থাকে। এই উপাদানটি মানুষের হৃদযন্ত্র ভালো রাখতে বিশেষ কাজ করে থাকে। সুতরাং রমজান মাসের রোজা রেখে ইফতারে প্রতিদিন কলা রাখা যেতে পারে। এছাড়াও জেনে নিন ইফতারে কলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে

(১) ইফতারে শক্তি বাড়াতে কাজ করে পাকা কলা

সারাদিন রোজা রাখার ফলে ইফতারের সময় শরীর সহজেই ক্লান্ত হয়ে যায়। আর এই সময়ে দ্রুত শক্তি বাড়াতে চাইলে ইফতারে রাখুন পাকা কলা। কেননা অল্প সময়ের ভিতরে শক্তি বৃদ্ধি করতে কলার জুড়ি নেই। যে কোন কারনে যদি শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা ও পাকা কলা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে। কেননা কলায় থাকা বিভিন্ন উপকারী উপাদান গুলো আপনার শরীরের ক্লান্তি গুলো অল্প সময়ে দূর করে দিতে পারে। 



(২) হাড় ভালো রাখতে হলে খেতে হবে পাকা কলা

হাড় শরীরের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। কেননা শুধুমাত্র হাড়ের জন্যই আপনি চলাফেরা, কাজকাম, খেলাধুলা সবকিছু করতে পারেন। এবং বিভিন্ন আঘাত অথবা প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে শরীর কে রক্ষা করতে পারেন। তাই শরীরকে সুস্থ রাখতে হলে হাড়ের দিকেও বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে। নতুবা একটা সময় আপনাকে হাড়ের বিভিন্ন সমস্যায় ভুগতে হতে পারে। বয়স ছাড়াও নানা কারণে আমাদের শরীরের হাড়ের ক্ষতি হতে পারে। এছাড়াও রোজায় জয়েন্টপেইন সহ হাড়ের বিভিন্ন সমস্যা থেকে দূরে থাকতে চাইলে অবশ্যই ইফতারের কলা খেতে পারেন। কেননা কলায় থাকা পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম হারকে শক্ত ও মজবুত করে তোলে। 

(৩) কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে পাকা কলা

প্রতিদিন রোজা রাখার কারণে শরীরে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি ঘাটতি দেখা দেয়। যে কারণে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা অনেক বেড়ে যায়। আর এই সমস্যা দূর করতে হলে প্রতিদিন ইফতারে রাখতে পারেন পাকা কলা। কেননা এই ফলে থাকে পেকটিন নামক এক ধরনের ফাইবার। আর এই ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা দূরে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

(৪) পেট পরিষ্কার রাখতে খেতে পারেন পাকা কলা

রোজা রেখে পেট পরিষ্কার রাখাটা খুবই জরুরী। কেননা হজমে কোন ধরনের সমস্যা দেখা দিলে তা হতে পারে আপনার অস্বস্তির কারণ।  সেই সাথে যোগ হতে পারে আরো বিভিন্ন ধরনের সমস্যা। যা রোজা রাখতে না পারার কারণ ও হতে পারে। এজন্য ভালো হজম ও পেট পরিষ্কারের জন্য খাবারের তালিকায় রাখতে হবে পাকা কলা। আপনি জানলে অবাক হবেন যে, একটি পাকা কলায় গড়ে প্রায় ৩ গ্রাম ফাইবার থাকে। ফলে এটি খুব দ্রুত হজম হয়ে যায়। সেই সঙ্গে পেট পরিষ্কার এর কাজও করে।

(৫) ডায়াবেটিসের কোন ক্ষতি করেনা পাকা কলা

অনেকে মনে করেন পাকা কলা মিষ্টি জাতীয় ফল বিধায় এটি ডায়াবেটিসের ক্ষতি করতে পারে। এজন্য অনেক ডায়াবেটিকস রোগী ভয়ে পাকা কলা খেতে চায় না। তাদের ধারণা কলা খেলে রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে অনেকাংশে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো পাকা কলাতে জিআই ভ্যালু খুবই কম। যে কারণে এটি ডায়াবেটিসের কোন ক্ষতি করে না। তাই ডায়াবেটিসের রোগীরাও নিশ্চিন্তে খেতে পারেন পাকা কলা।

Disclaimer

বন্ধুরা আশা করি রোজায় পাকা কলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আপনারা বুঝতে পেরেছেন। এ বিষয়ে কোন মতামত থাকলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন। এতক্ষণ প্রতিবেদনটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ।


Post a Comment

Previous Post Next Post