ডেঙ্গু মশা চেনার উপায়,ডেঙ্গু মশা কোথায় জন্মায়,ডেঙ্গু মশা দেখতে কেমন,ডেঙ্গু মশার উৎপাত থেকে বাঁচার পরামর্শ দিলেন চিকিৎসক
ডেঙ্গু মশা যা একটি আতঙ্কের নাম। ঋতু পরিবর্তন হওয়ার সাথে সাথে ডেঙ্গু মশার ও উপদ্রব বেড়ে গেছে। যে কারণে আশেপাশে অনেকেরই হতে দেখা যাচ্ছে ডেঙ্গু জ্বর। ঠিকমতো সঠিক চিকিৎসা না পাওয়ার কারণে অকালে প্রাণ হারাচ্ছে হাজারো মানুষ। তাই আজকে আমরা আলোচনা করব এই ডেঙ্গু মশা সম্পর্কে। যা থেকে আপনারা জানতে পারবেন দিনের কোন সময় এই মশার উপদ্রব বাড়ে।
আপনি জানেন কি দিনের কোন সময় ডেঙ্গু মশা কামড়ায়?
আপনারা শুনে অবাক হবেন যে দিনের সব সময় কিন্তু ডেঙ্গু মশা কামড়ায় না। যদিও এখন নতুন শিত পরছে যে কারণে মশার উপদ্রব ও বৃদ্ধি পেয়েছে অনেকাংশে। তাই ডেঙ্গু নিয়ে সচেতন হওয়া প্রয়োজন। চিকিৎসকদের মতে ডেঙ্গুর পিছনে থাকে এডিস ইজিপ্টি মশা। সকলে মনে করেন এই মশা কেবল দিনের বেলাতেই কামড়ায়। তবে একথা কি আদৌ সত্যি? তাছাড়া মশার শরীরে ভাইরাসও বা আসে কি করে? এ বিষয়ে বিস্তারিত জানালেন চিকিৎসক।
প্রথম পয়েন্ট
ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। বর্তমানে সারা বাংলায় একটাই মহামারী রূপ ধারণ করেছে এই বিশেষ জ্বর। আর এই পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে চাইলে অবশ্যই প্রত্যেকের সচেতন হতে হবে। এবং সেই সাথে ডেঙ্গু প্রতিরোধে উপায় জানতে হবে। কিন্তু সত্যি বলতে ডেঙ্গু প্রতিরোধের সচেতনতা এই বিষয়টি এখনও অন্তরায় রয়ে গেছে।
দ্বিতিয় পয়েন্ট
আমরা সবাই জানি ডেঙ্গু একটি ভাইরাস জনিত রোগ। যার পেছনে রয়েছে এডিস ইজিপ্টি এক প্রজাতির মশা। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় ডেঙ্গু বিভিন্ন সমস্যা তৈরি করে থাকে মানুষের শরীরে। আর এক্ষেত্রে আরো বেশি সমস্যা সৃষ্টি করে থাকে ডেঙ্গু সম্পর্কে অজ্ঞতা। যে কারণে এই অসুখটিকে আরও জটিল করে তোলে।
ডেঙ্গু মশার শ্রেণীবিভাগ
(১) ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধ
কলকাতা শহরের বিশিষ্ট চিকিৎসক রঞ্জিত পাল এর একটি প্রতিবেদনে বলেছিল ডেঙ্গু এখন খুবই বেড়ে গেছে। ডেঙ্গু অসুখ থাকলে জ্বর, গায়ে ব্যথা, চোখের পিছনে ব্যথা, গাঁটে ব্যথা ইত্যাদি বিভিন্ন লক্ষণ দেখা দিয়ে থাকে। তাছাড়া ডেঙ্গি হেমোরেজিক ফিভার রক্তপাত হয়ে থাকে। তবে এটি সম্পর্কে সচেতন হতে হবে এবং ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত রোগীর যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের চিকিৎসা প্রদান করতে হবে। সেইসাথে ডেঙ্গি রোগের খাবারদাবার বিশেষভাবে সচেতন হতে হবে।
(২) ডেঙ্গু মশা কখন কামড়ায়
ডাক্তার রুদ্রজিত পাল এর মতে এটি চক্রাকারে ঘুরতে থাকে। প্রকৃতপক্ষে আমাদের আশেপাশে অনেক মানুষ রয়েছে যারা ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত। আবার একদিক থেকে এডিস মশা সেই আক্রান্ত মানুষদের কামড়ায়। যে কারণে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীর থেকে মশার শরীরে ভাইরাস প্রবেশ করে। আবার সেই মশা যখন অন্য কোন সুস্থ মানুষকে কামড়ায় তখন থেকে সুস্থ মানুষের শরীরে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ে। এবং এভাবেই একজন থেকে হাজার জনের ভিতর ছড়িয়ে পড়ে ভাইরাসটি। যার কারণে চক্রাকারে এই রোগটি ঘুরতে থাকে মানুষের মধ্যে। এজন্য সর্বোপরি সচেতন থাকতে হবে এডিস মশা সম্পর্কে।
আরো পড়ুন বুক জ্বালাপোড়া করার কারন ও ঘরোয়া চিকিৎসা
(৩) ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করার কতদিন পর রোগের লক্ষণ দেখা দেয়,
মশা কামড়ানোর কতদিন পর ডেঙ্গু হয়
ডঃ রঞ্জিত পাল আরো বলেন যে একটি কথা মাথায় রাখতে হবে। অন্যসব ভাইরাসের মত এই ভাইরাসটি ও প্রথমে মানুষের শরীরে গিয়ে নিজের বংশ বিস্তার করে। এবং এটি খুব দ্রুত সময়ের ভিতর পুরো শরীরে বংশবিস্তার করে ছড়িয়ে যায়। মোটামুটি দুই থেকে সাত দিনের ভিতরে এই ভাইরাসের লক্ষণ দেখা দিতে শুরু করে। তবে যাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি অথবা ইমিউনিটি সিস্টেম ভালো তাদের শরীরের এর থেকে বেশি দিন পরেও লক্ষণ দেখা দিতে পারে। সুতরাং আমাদের অবশ্যই এ ব্যাপারে সচেতন হওয়া উচিত ।
(৪) ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে/ডেঙ্গু মশার উৎপত্তি
ডেঙ্গু প্রতিরোধের সবচেয়ে বড় করণীয় হলো জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা। ডেঙ্গুর উপদ্রব বৃদ্ধি না পায় সে ব্যাপারে সচেতন হওয়া ।বিশেষ করে বাড়ির আশেপাশে কোথাও পানি জমে থাকলে সে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা করতে হবে। সেই সাথে আশেপাশের ঝোপঝাড় অথবা অপরিষ্কার রাখা যাবে না। মশার ধূপ পাতেল ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া মশা দূর করা একপ্রকার ক্রিম পাওয়া যায় এটি ব্যবহার করতে পারেন। জানালা দরজা যতটা সম্ভব বন্ধ করে রাখতে পারেন। তবে আজকাল হাটে বাজারে জানালায় লাগানোর জন্য এক ধরনের নেট পাওয়া যায়। এটিও জানালা ব্যবহার করতে পারেন। তাহলে বাইরের আলো বাতাস ভেতরে ঢুকতে পারবে কিন্তু মশা ঢুকতে পারবে না। হাত পা ঢাকা জামাকাপড় পড়তে হবে। আর একটা কাজ অবশ্যই করতে হবে আর তা হল প্রত্যেকের বাড়িতেই প্রায় ফ্রিজ থাকে এবং ফ্রিজের পিছনের অংশে পানি জমে থাকে অবশ্যই এদিকে খেয়াল রাখতে হবে। যেন বেশি দিন সেখানে পানি জমে না থাকে। তাহলে সেখানে হতে পারে মশার বংশবিস্তার করার জায়গা। মোটামুটি ডেঙ্গু প্রতিরোধে এরকম কিছু বিষয় রয়েছে যা সম্পর্কে সচেতন হলেই দেখা যাবে ডেঙ্গু প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়েছে।