ডিপ্রেশন দূর করতে যা করবেন
শরীর সুস্থ থাকলে মানসিকভাবে সুস্থ থাকা যায় কথাটি সম্পূর্ন সঠিক নয়। কেননা শরীরকে সুস্থ রাখার ক্ষেত্রে মানসিকভাবে সুস্থ থাকাটাও অনেক জরুরী। ডিপ্রেশন বা মানসিক সমস্যার কারণে শরীর সহজেই অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাই শরীরকে সুস্থ রাখার জন্যও আমরা ঠিক যতটা সচেতন হই, তেমনি মানসিকভাবে ও সুস্থ থাকতে হলে কিছু অভ্যাস চর্চা করা অতন্ত জরুরি।
ডিপ্রেশন দূর করতে করণীয় টিপস
সাধারণত প্রত্যাশা প্রাপ্তির মধ্য দিয়ে ডিপ্রেশন বা মানসিক সমস্যা সৃষ্টি হয়ে থাকে। যখনই মানুষের প্রত্যাশা, প্রাপ্তির মধ্যে বিস্তার ফারাক তৈরি হয় তখনই আমাদের মধ্যে চলে আসে হতাশা, অবসাদ এবং বিষন্নতা। বর্তমানে এই ডিপ্রেশন বা হতাশার ভিতরে ছোট বড় সবাই কোন না কোন সময় জড়িয়ে পড়ে। যে কারণে ব্যক্তিগত ও কর্মজীবনে স্বাভাবিক কার্যক্রমে এর বিশেষ প্রভাব পড়ে। এজন্য সুস্থ শরীরের পাশাপাশি সুস্থ মন ও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চলুন তবে দেখে নেয়া যাক ডিপ্রেশন দূর করতে করণীয় অভ্যাসগুলো।
(১) ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে সূর্যের আলো লাগানো
সকালের কিছু স্বাস্থ্যকর অভ্যাসের কারণেই দূর হতে পারে ডিপ্রেশনের মতো মানসিক সমস্যা। তাই এটি সবার জেনে রাখা উচিত , যে সূর্যের আলো আমাদের শরীরের সুখী হরমোন গুলোর উৎপাদন বাড়ায়। তাই যত সকালে সম্ভব ঘুম থেকে উঠে গায়ে সূর্যের আলো লাগাতে হবে। এতে শরীরে সুখী হরমোনের উৎপাদন বাড়বে। ফলে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটতে শুরু করবে। বিশেষ করে যারা ডিপ্রেশনে আক্রান্ত তাদের জন্য এই অভ্যাসটি অত্যন্ত ফলদায়ী।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল যে, মেলাটোনিন নামক উপাদান শরীরের ঘুমের সাইকেল বা চক্রকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। এবং এটি অন্ধকারে নিঃসৃত হতে শুরু করে। অর্থাৎ সূর্যাস্তের পর অন্ধকারে আমার সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্কে মেলাটোনিন হরমোনের ক্ষরণ বাড়তে থাকে। আবার দিনের বেলা সূর্যের আলোয় মেলাটোনিন কমে যায়। তাই মেলাটোনিনের মাত্রা কমাতে কিছুক্ষণের জন্য হলেও সূর্যের আলোয় দাঁড়ানো উচিত। এতে মেজাজ ও উন্নত হয়।
(২) নির্দিষ্ট সময় ঘুম থেকে ওঠা
প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুম থেকে উঠার চেষ্টা করুন। কেননা নির্দিষ্ট সময় ঘুম থেকে ওঠার ফলে শরীরে শারীরিক প্রক্রিয়া সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে এবং ভালো ঘুম হতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমের ফলে সুস্থতা অনুভব হয়। এটি ডিপ্রেশন রোগীদের জন্য খুবই উপকারী। কারণ যেসব মানুষ ডিপ্রেশন বা শারীরিক সমস্যার ভোগে তাদের শরীরে প্রচুর পরিমাণে ঘুমের ঘাটতি থাকে।
আরো পড়ুন শুক্রাণু বাড়াতে রসুনের কার্যকারিতা
(৩) শ্বাস-প্রশ্বাসে ব্যায়াম
প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে কিছুক্ষণের জন্য শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করলে, সারাদিন মনকে যথেষ্ট ভালো রাখা যায়। এটি শরীরে উদ্বেগ এবং চাপ কমাতে বিশেষ সাহায্য করে থাকে। বিশেষ করে শরীরচর্চা বা ব্যায়াম বিষন্নতা, উদ্বেগ ইত্যাদি সমস্যায় খুবই কার্যকরী ফল দেয়। কেননা শরীরচর্চা করার ফলে এন্ড্রোরফিন হরমোন ক্ষরণ হতে থাকে যা আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়।
(৪) স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া
শরীর এবং মনকে ভালো রাখতে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। বিশেষ করে সকালবেলা স্বাস্থ্যকর নাস্তা না করা শরীর এবং মানসিক দিক থেকে অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই অবশ্যই স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। নিয়মিত সুষম খাবার গ্রহণের রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং শরীরে সারাদিনের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি জোগাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। যা আপনার শরীর এবং মন ভালো রাখতে বিশেষভাবে কাজ করে।
(৫) নিজেকে কাজে ব্যস্ত রাখা
ডিপ্রেশন বা মানসিক সমস্যায় কখনো নিজেকে ফ্রি রাখা বা একাকীত্ব রাখাটা উচিত নয়। এতে ডিপ্রেশন বা মানসিক সমস্যার প্রভাব আরো বেশি বৃদ্ধি পায়। এ সময়ে যতটা সম্ভব নিজেকে কাজে ব্যস্ত রাখা উচিত। যদি কোন কাজ না থাকে তবে বই পড়া, খেলাধুলা অথবা বন্ধু-বান্ধবদের সাথে ঘুরতে যাওয়া এসব কাজ করা যেতে পারে। এতে আপনার মন সর্বদা ব্যস্ত থাকবে। যে কারণে ডিপ্রেশন এর চিন্তা মাথায় আসবে না।
Disclaimer
ডিপ্রেশন অথবা মানসিক সমস্যায় এই টিপসগুলো অত্যন্ত কার্যকরী। কিছুদিন এই টিপসগুলো মেনে চললে অবশ্যই আপনি ডিপ্রেশন অথবা মানসিক সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসতে পারবেন। বন্ধুরা এই ছিল আমাদের আজকের ডিপ্রেশন অথবা মানসিক সমস্যায় করণীয় কয়েকটি টিপস। আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন। এছাড়াও আপনাদের কিছু জানার থাকলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন। এতক্ষণ কষ্ট করে লেখাটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।