কাজুবাদাম কেন খাবেন? আপনি জানেন কি? কাজুবাদাম খাওয়া শরীরের জন্য কতটা উপকারী?
কাজুবাদাম আমাদের সকলের পরিচিত একটি দানাদার জাতীয় খাবার। এটি বাংলাদেশ একটু কম পরিমাণে পাওয়া গেলেও, চাহিদা রয়েছে ব্যাপক পরিমাণে। তবে বাংলাদেশের থেকে ভারতে এর উৎপাদন অনেক গুণ বেশি হয়। কাজু বাদাম ছোট বড় সকলেরই খুব প্রিয় একটি খাবার। কাঁচা অথবা রান্না করে বিভিন্ন আইটেম তৈরি করেও খাওয়া যায়। এটি যেমন পুষ্টিকর একটি খাবার, তেমনি সুস্বাদু। মোটকথা কাজু বাদামের তুলনা অন্য কারোর সাথে করা যায় না।
কাজুবাদাম গাছের আদি জন্ম ব্রাজিলে হলেও, সারা বিশ্বের উষ্ণ আবহাওয়াতে এটি ব্যাপকভাবে চাষ করা হয়। এটি আপনি যেভাবে চাইবেন সেভাবে খেতে পারবেন। এটি রান্নায় স্বাদ বৃদ্ধি করে, বিশেষ করে সেমাই ফিরনি সহ বিভিন্ন দামি দামি খাবার আইটেমে এই কাজুবাদাম ব্যবহার করা হয়। একটা কথা আপনি জানলে অবাক হবেন যে, কাজুবাদামে যে পরিমাণ প্রোটিন পাওয়া যায় তা অন্য কোন উদ্ভিদ জাতীয় খাবারে পাওয়া যায় না। এক কথায় বলতে গেলে রান্না করা মাংসের যে পরিমাণ প্রোটিন থাকে, প্রায় সমপরিমাণ প্রোটিন থাকে কাজু বাদামে। এছাড়াও এতে অনেক বেশি পরিমাণে ফাইবার থাকে । যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এতে শরকরার পরিমাণ অনেকাংশে কম থাকে।
সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর খাবারের ভিতর এই কাজুবাদাম বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে আছে। বিশেষ করে কাজু বাদামের পুষ্টি উপাদানের সমৃদ্ধ বীজ। কাজুবাদামের বীজ খাবার হিসেবে খাওয়া হয়। অতএব পুষ্টি উপাদান এর কারণে এর স্বাস্থ্য উপকারিতা ও অনেক বেশি। এটি খাওয়ার ফলে শরীর সুস্থ থাকে হাড় শক্ত ও মজবুত হয়, শরীরে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে, হার্টের যত্ন নেবার পাশাপাশি আরও অনেক উপকার করে থাকে।
জেনে নিন কাজুবাদাম কি কি উপকার করে থাকে!
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরা এই কাজুবাদাম, এককথায় একে এন্টিঅক্সিডেন্টের পাওয়ার হাউস বললেও ভুল হবে না। আর আমরা তো সবাই জানি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হৃদরোগ চোখের বিভিন্ন সমস্যা ও স্মৃতিশক্তি জনিত যেকোনো সমস্যা সমাধানে প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। সেদিক থেকে বিবেচনা করলে যাদের এই সমস্যাগুলো হয়ে থাকে তাদের পক্ষে কাজুবাদাম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
শরীরের ওজন কমাতেও কাজুবেদামের ঝুড়ি মেলা ভার। অন্যান্য বাদামে ক্যালোরি এবং ফ্যাট এর পরিমাণ অত্যন্ত বেশি থাকার কারণে, শরীরের ওজন বৃদ্ধি করে। তবে গবেষণা তে দেখা গেছে যে কাজুবাদামে যে পরিমাণ ক্যালরি থাকে তার ৮৪ শতাংশ শরীর হজম করতে ও শুষে নিতে পারে। যে কারণে কাজু বাদামের ফ্যাট শরীরে জমাতে পারেনা। তাছাড়া এটি প্রোটিন ও ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায় খুদা কম লাগে এবং অনেকক্ষণ পেট ভরে রাখতে সহায়তা করে। যে কারণে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা ও থাকে না।
কাজুবাদাম হার্টের যত্ন নেয়। স্টোক ও হৃদ রোগের ঝুঁকি কমাতে বিশেষ কাজ করে থাকে কাজুবাদাম । একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে কাজুবাদাম নিয়মিত খাওয়ার ফলে শরীরে রক্তচাপ ও ট্রাইগিসাইড এর মাত্রা কমিয়ে আনে এবং হার্টের স্বাস্থ্য উন্নতি করে। সুতরাং হার্টের রোগীদের কাজুবাদাম খাওয়া অত্যন্ত উপকারী।
ডায়াবেটিস প্রতিরোধেও কাজুবাদাম বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এতে থাকা ফাইবার রক্তের শর্করা প্রতিরোধ করতে সহায়তা প্রদান করে । যে কারণে ডায়াবেটিকস ও নিয়ন্ত্রণে থাকে ।সুতরাং যাদের শরীরের ডায়াবেটিস আছে তারা নিশ্চিন্তে এই খাবারটি খেতে পারেন। এতে আপনার ডায়াবেটিসের কোন ক্ষতি করবে না বরং উপকারে আসবে। তাছাড়া এটি মানুষের শরীরের হাড় গঠনে শক্ত ও মজবুত করে। কাজুবাদামে থাকা ম্যাগনেসিয়াম এবং ম্যাঙ্গানিজ থাকার কারণে এটি হাড়ের গঠনে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
আরো পড়ুন ঢেড়স সম্পর্কে
সাবধানতা বর্তমানে দেখা যায় সারা পৃথিবীতেই কাজুবাদাম কাঁচা অবস্থায় প্যাকেটজাত করে বিক্রি করা হয় ।এবং মানুষ এটিকে কাঁচা অবস্থায় খেতে বেশি পছন্দ করে। কিন্তু একটা কথা অবশ্যই জানা দরকার। কাজুবাদাম কাঁচা অবস্থায় খাওয়ার থেকে রান্না করে খাওয়াটাই উচিত। কেননা কাঁচা অবস্থায় এটি নিরাপদ নয়। কারণ কাঁচা অবস্থায় কাজুবাদামের ভেতর উরুশিয়াল নামের একটি বিষাক্ত পদার্থ থাকে। যেটি মানুষের ত্বকের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে থাকে। সুতরাং আমাদের এই বিষয়টি সম্পর্কে অবশ্যই সচেতন হতে হবে। এবং সেই সাথে কাজুবাদাম কাঁচা অবস্থায় না খেয়ে রান্না করে খেতে হবে। তাহলে আর এই প্রতিক্রিয়া টি সৃষ্টি হতে পারবেনা।
তো বন্ধুরা এই ছিল আমাদের আজকের কাজুবাদাম সম্পর্কে প্রতিবেদন। আশা করি সবাই বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন এবং ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। কথা হবে পরবর্তী পোস্টে। সেই পর্যন্ত সবাই সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন। নিয়মিত শরীরচর্চা করুন।
তরমুজ কেন এতো দামি? গরমে যে কারণে তরমুজের চাহিদা সবথেকে বেশি
গ্রীষ্মকাল আসতেই বাজারে দেখা মেলে তরমুজের। লাল টকটকে সুস্বাদু এই ফলটি দেখতে যেমন আকর্ষণীয় তেমনি রয়েছে এর হাজারো পুষ্টিগুণ। আপনিও জানলে অবাক হবেন লোভনীয় এই ফলটির রয়েছে স্বাস্থ্যের জন্য বিশেষ উপকারী কয়েকটি বৈশিষ্ট্য। শরীরকে আদ্র সতেজ রাখা থেকে শুরু করে যেকোনো জয়েন্টের ব্যথা, চোখ, হার্ট সহ স্টেমিনা বাড়াতে দারুন উপকার করে এই ফলটি। জেনে নিন তরমুজের আরো বেশ কয়েকটি উপকারিতা সম্পর্কে।
গরমে যে কারণে তরমুজের চাহিদা সবথেকে বেশি
গরমে যে কারণে তরমুজ খাবেন
(১) লাইপকোপিনের চাহিদা পূরণ করে তরমুজ
লাল রংয়ের ফল অথবা সবজিতে পাওয়া যায় লাইকোপেন নামক এক ধরনের উপাদান। যা এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। বিভিন্ন গবেষণায় এটি প্রমাণিত হয়েছে যে ক্যান্সার ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে বিশেষ উপকারী হল এই লাইকোপিন। তবে মজার কথা হলো অন্য যেকোনো লাল রঙের ফল বা সবজির চেয়ে তরমুজ ও টমেটোতে এই পুষ্টিগুণ অনেক বেশি থাকে। এছাড়াও বীজহীন তরমুজে লাইকোপিন মাত্রা আরও অত্যাধিক পরিমাণে থাকে।
(২) হার্ট ভালো রাখতে তরমুজ খেতে পারেন
তরমুজের ভেতর সিট্রুলাইন নামক এক ধরনের অ্যামিনো এসিড রয়েছে। যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে বিশেষভাবে কাজ করে থাকে। তাছাড়াও লাইকোপেনযুক্ত তরমুজ হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে বিশেষ ভাবে কাজ করে থাকে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত এবং পরিমাণ মতো তরমুজ খাওয়ার ফলে হার্ট এটাকের ঝুঁকি অনেকাংশে কমতে শুরু করে। সুতরাং হার্টের যত্নে অবশ্যই তরমুজ খাওয়া যেতে পারে। তবে শুধু তরমুজ খেলেই হবে না এর সাথে ধূমপান এবং স্যাচুরেটেড জাতীয় খাবার সীমিত করতে হবে ।
(৩) চোখের যত্নে তরমুজ এর উপকারিতা
আপনি জানলে অবাক হবেন যে মাঝারি এক টুকরো তরমুজে প্রায় ৯ থেকে ১১ শতাংশ ভিটামিন এ থাকে। যা প্রতিদিনের ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করতে যথেষ্ট। আর এই পুষ্টি উপাদানই চোখ সুস্থ রাখার অন্যতম চাবিকাঠি। সুতরাং শরীরে প্রয়োজনীয় সব ধরনের ভিটামিন এবং পুষ্টি উপাদান পেতে নিয়মিত তরমুজ খেতে হবে।
(৪) জয়েন্টের ব্যথা কমায়
তরমুজে বিটা ক্রিপ্টোক্সানথিন নামক এক ধরনের প্রাকৃতিক রঞ্জক বিদ্যমান রয়েছে। যা জয়েন্ট এর ব্যাথা থেকে মুক্তি দিতে পারে। বিজ্ঞানীদের বেশ কয়েকটি গবেষণা একটি প্রমাণ করেছে যে তরমুজে থাকা এই রঞ্জক রিউমাটয়েড আর্থাইটিস হওয়ারও ঝুঁকি কমায়।
(৫) গরমের পানি শূন্যতা কমায় তরমুজ
অতিরিক্ত গরমে শরীর থেকে পানি বেরিয়ে যায়। যে কারণে প্রত্যেকটা প্রাণীর পানি স্বল্পতা দেখা দেয়। রসালো এই তরমুজে প্রায় 92 শতাংশই রয়েছে পানি। আর গরমে এই পানি শূন্যতার হাত থেকে শরীরকে হাইড্রেট করতে তরমুজের বিকল্প আর নেই। শরীরের প্রতিটি কোষেই পানির প্রয়োজন হয়। আর যখন শরীরে পানির পরিমাণ কমে যায় তখন এনার্জি ও কমে যায়। এবং শরীরে অলসতা বাসা বাধতে শুরু করে। সুতরাং গরমের এই পানি শূন্যতায় তরমুজ পারে এটি দূর করতে।
আরো পড়ুন মুখ ও দাঁতের স্বাস্থ্য খারাপ হওয়ার লক্ষণগুলো এবং কারণগুলো জেনে নিন
(৬) ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সহায়তা করে
তরমুজে থাকা ভিটামিন এ, বি৬ ও সি শরীরের ত্বককে মসৃণ, কোমল ও উজ্বলময় রাখতে সহায়তা করে। আমরা সবাই জানি তরমুজে পানির পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। সুতরাং এর রস ফেসপ্যাক এর সঙ্গে মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহারের ফলে উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও ত্বকের কোন প্রকার স্পর্ট থাকলে তা দূর হয়ে যায়।
(৭) মিষ্টির স্বাস্থ্যকর বিকল্প তরমুজ
আমরা জানি এক কাপ আইসক্রিমের থাকে প্রায় ৩০০ ক্যালোরি। অন্যদিকে এক কিউব তরমুজের পানীয়তে মিলতে পারে ৪৫.৬ ক্যালরি। তবে এতে চিনি মেশানো যাবে না। তবে ব্লেন্ডারের তরমুজের পিউরি নিয়ে এর সঙ্গে সামান্য পরিমাণে লেবুর রস মিশিয়ে ফ্রিজ আপ করে রেখে দিতে পারেন। শক্ত হওয়ার পর এটি আইসক্রিমের বিকল্প হিসেবে খেতে পারেন।
(৮) স্টেমিনা বাড়াতে সহায়তা করে তরমুজ
তরমুজে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ওই অ্যামিনো এসিড শরীরের ক্ষেত্রে স্ট্যামিনা বাড়াতে সহায়তা করে। এতে থাকা পটাশিয়াম ওয়ার্কআউটের পর শরীরের ব্যথা দ্রুত কমিয়ে আনে। এছাড়া অতিরিক্ত পরিশ্রম করার পর তরমুজের পানি চুমুক দিয়ে চাঙ্গা হতে পারেন অল্প সময়ের ভিতর।
(৯) ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রণ করে তরমুজ
চিকিৎসা বিজ্ঞানের একটি পরীক্ষায় এটি প্রমাণ করেছে যে, তরমুজে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স জিআই মান ৮০। অর্থাৎ প্রায় এক বাটি কনফেলেক্সের সমান। তবে তরমুজে কিছু পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট থাকে। সুতরাং এটি খুব দ্রুত আপনার রক্ত প্রবাহে প্রবেশ করে গ্লুকোজ উৎপন্ন করতে পারে।
তরমুজের দাম বেশি হওয়ার কারন
তরমুজের দাম বেশি হবার সবথেকে বড় কারন হলো সার দেশে এর উৎপালন চাহিদার তুলনায় অনেক কম। যে কারনে এটি বাজারের অনেক দাম হয়ে থাকে। তাছাড়া তরমুজ ফলনে ও অনেক কম হয়ে থাকে। বিশেষ করে একটি তরমুজ গাছে ২-৩ টি বড় আকারের ফল পাওয়া যায়। যা উৎপালন করতে ব্যায় ও অনেক বেশি হয়।
সুতরাং আপনারা অবশ্যই তাহলে বুঝতে পেরেছেন। বাজারে তরমুজের কেন এত বেশি চাহিদা। এছাড়াও তরমুজ সারা বাংলাদেশের প্রায় সব এলাকাতে চাষ করা হয়। এবং এটি বিদেশেও রপ্তানি করা হয়। সারা দেশে এর ব্যাপক চাহিদা থাকায় ভালো দাম ও পাওয়া যায়। পরিশেষে এটাই বলব, গরমে তরমুজ খুবই উপকারী একটি ফল।যা প্রত্যেকেরই পর্যাপ্ত পরিমাণে খাওয়া উচিত।
আশা করি লেখাটা পড়ে তরমুজ সম্পর্কে একটু হলেও জানতে পেরেছেন। ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। ধন্যবাদ সবাইকে।
গরমে কুল থাকতে জলখাবারে খেতে পারেন টক দই।
টক দই এর উপকারিতা বলে শেষ করা কঠিন। টক দই যেমনই একটি সুস্বাদু খাবার, তেমনি রয়েছে অনেক গুনাগুন। সারা বছর টক দই খেতে পারলে ভালো। তবে গরমের দিনে যদি টক দই আপনার প্রধান স্নাকস বানিয়েনিন তাহলে উপকার মিলবে দ্বিগুন।
গরমে ঠান্ডা থাকতে জলখাবারে খেতে পারেন টক দই
আমরা সবাই জানি দই সাধারণত দুধ চিনি দিয়ে তৈরি করা হয়ে থাকে। আর দুধ সর্বদাই উচ্চ শক্তি সম্পন্ন একটি খাবার। তবে গরমকালে এটি শরীরকে ঠান্ডা রাখতে অনেক ভালো কাজ দেয়। বিশেষ করে ফ্রিজে রাখা দই। গরমের সময় এর তুলনা হয় না। কঠোর পরিশ্রম করে শরীরকে ঠান্ডা ও সতেজ করতে জলখাবারে খেতে পারেন এই টক দই। এছাড়াও টক দইতে রয়েছে আরো বেশ কিছু উপকারিতা। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক টক দইয়ের কিছু উপকারিতা।
টক দই এর উপকারিতা
টক দই যে শুধু গরমে ঠান্ডা রাখে তাই নয়। এতে রয়েছে আরও বেশ কিছু উপকারিতা। যা আমাদের শরীরের জন্য বিশেষ দরকারি। নিচে কয়েকটি পয়েন্টের মাধ্যমে টক দই এর উপকারিতা গুলো আলোচনা করা হলো।
(১) বদহজমের সমস্যায় টক দই
টক দই আমাদের দেহে সাধারণত প্রবায়োটিক হিসেবে কাজ করে থাকে। অর্থাৎ টক দইয়ের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভালো ব্যাকটেরিয়া রয়েছে। যা তন্ত্রের স্বাস্থের বিশেষভাবে খেয়াল রাখে। সুতরাং গরমে টক দই খেলে আপনি সহজেই বদহজমের সমস্যা এড়াতে পারবেন। যাদের গরমের সময় বেশি সমস্যা দেখা দেয় তারা তাদের প্রতিদিনের খাবারের মেনুতে টক দই রাখতে পারেন।
(২) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় টক দই
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য আপনাকে অবশ্যই নিয়মিত বেশি করে টক দই খেতে হবে। কেননা এটি ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস ঘটিত রোগ এড়াতে বিশেষভাবে সাহায্য করে থাকে। অন্যদিকে টক দই ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ হওয়াতে হাড়ের ক্ষয় রোধ করে। আর দাঁতকে শক্ত এবং মজবুত করে। সুতরাং যাদের শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব আছে বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম আছে তারা প্রতিদিন এই স্বাস্থ্যকর খাবারটি খেতে পারেন।
(৩) প্রদাহ কমাতে টক দই
গরমে সাধারণত ত্বকের উপর নানা ধরনের প্রদাহ সৃষ্টি হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে টক দই খেলে আপনি সহজেই ত্বকের এসব সমস্যা থেকে দূরে রাখতে পারেন নিজেকে। কেননা প্রদাহ কমাতে বিশেষভাবে সাহায্য করে থাকে টক দই। প্রদাহ কমানোর পাশাপাশি এটি অন্যান্য এলার্জি লক্ষণগুলো কমাতে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
(৪) জলখাবার হিসেবে টক দই
টক দইতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, আয়রন, প্রোটিন, ফসফরাস, পটাশিয়াম সহ অন্যান্য অনেক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। সুতরাং জলখাবার হিসেবে টক দই খেলে আপনার শরীরের বিভিন্ন পুষ্টি চাহিদা পূরণ হবে। এছাড়া জলখাবারের টক দই খেলে আপনি সতেজতা অনুভব করতে পারবেন। তবে কোন উপায়ে টক দই খেলে আপনি বেশি উপকার পাবেন এটা আপনাকে সঠিকভাবে জানতে হবে। টক দইয়ে কোন প্রকার চিনি বা বাতাসা মিশিয়ে খাওয়াটা উচিত নয়। বরং প্রয়োজনে টক দইয়ের সাথে সামান্য মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে বেশি উপকার পাবেন।
আরো পড়ুন সন্তানকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করতে এই কথাগুলো প্রতিদিন একবার হলেও বলুন
(৫) ওজন কমাতে টক দই
টক দই খিদে কমাতে সাহায্য করে। যে কারণে নিয়মিত টক দই খেয়ে আপনার শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে পারেন। অনেকেই আছে যারা তাদের শরীরে অতিরিক্ত ওজন নিয়ে চিন্তিত। বিভিন্ন প্রকার ওষুধ অথবা ব্যায়াম করার ফলেও তাদের ওজন কমাতে পারছে না। তাদের ক্ষেত্রে টক দই অনেক উপকারী বন্ধু হিসেবে কাজ করে। প্রতিদিনের ডায়েটে টক দই রাখার ফলে আপনিও আপনার শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে পারেন খুব সহজে।
(৬) তাজা ফলের সাথে টক দই
বিভিন্ন প্রকার তাজা ফলের সাথে টক দই খেতে পারেন। বিশেষ করে টক দই দিয়ে বেরি, কিউই ইত্যাদি ফল খেতে পারেন। অথবা ওটস দিয়েও টক দই খেতে পারেন। অনেকে আবার টক দই দিয়ে বায়তা বানিয়ে খায়। কিংবা টক দই দিয়ে স্মুদি বানিয়ে খেয়ে থাকে। এতেও অনেক উপকার পাওয়া যায়। তবে এক এক প্রকার খাবারের গুনাগুন ও পুষ্টিগুণ স্বাধের মত ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে।
(৭) হাইড্রেড রাখতে টক দই
গরমে যদি অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো ও সতেজ রাখতে চান তবে বাটার মিল্ক বা ঘোল পানীয় পান করতে পারেন। কেননা গরমে বাটার মিল্ক পান করলে শরীর হাইড্রেট থাকে। এই পদ্ধতিতে আপনি রোগের ঝুঁকিও এড়াতে পারেন খুব সহজে। সুতরাং অতিরিক্ত গরমে যাদের শরীরে পানি স্বল্পতা দেখা দেয় তাদের ক্ষেত্রে এটি খুব উপকারী একটি খাবার।
Disclimer
পরিশেষে এটা বলা যায় যে গরমে টক দই এর বিকল্প আর নেই বললে চলে। শরীরকে ডিহাইডেট রাখতে এবং প্রয়োজনীয় সকল পুষ্টি ঘাটতি পূরণ করতে টক দই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সুতরাং গরমে শরিরকে ঠান্ডা রাখতে প্রতিদিনের জলখাবারে রাখতে পারেন টক দই।
আমাদের আজকের প্রতিবেদনটি এ পর্যন্তই। আশা করি আপনারা সকলে বুঝতে পেরেছেন টক দই এর উপকারিতা সম্পর্কে। ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। এতক্ষণ কষ্ট করে লেখাটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
জ্বর হলে করণীয়,হালকা জ্বর হলে করণীয়,চোরা জ্বরের লক্ষণ,বার বার জ্বর আসার কারণ
জ্বর জ্বর ভাব কি করবেন?
জ্বর প্রত্যেক মানুষেরই কম বেশী হয়ে থাকে। আবহাওয়া পরিবর্তন হওয়ার সাথে সাথেই মানুষের এই সমস্যাটি হয়ে থাকে। তবে কারও ক্ষেত্রে একটু বেশি আবার কারো ক্ষেত্রে একটু কম। তবে বছরে দুই এক বার জ্বর সবারই হয়ে থাকে। অনেকের ক্ষেত্রে জ্বর থেকে মহামারী আকার ধারণ করে। আবার অনেকের আছে সামান্য জ্বর সর্দি হয়ে সেরে যায়। তবে আমাদের আজকের এই পোস্টে আপনাদের জানাতে চলেছি জ্বর জ্বর ভাব হলেই যা করণীয়। অথবা এই উপায় গুলো ব্যবহার করলে আপনার জ্বর ওঠার সাথে সাথেই আবার সুস্থ হয়ে যাবেন।
জ্বর জ্বর ভাব হলে করণীয়
জ্বর হলে প্রথমেই কি করেন আপনি? আতঙ্কিত না হয়ে প্রথমেই জ্বর জ্বর ভাব হলে যা করণীয় তা হল, জ্বর মাপা। চিকিৎসকরা সর্বদা পরামর্শ দিয়ে থাকে জ্বর হলেই ওষুধ না খেয়ে আগে জ্বর সঠিকভাবে মাপাতে হবে। অবশ্যই জ্বর মেপে তারপর ওষুধ খেতে হবে। তবে অতিরিক্ত শরীরে অবস্থা খারাপ হলে অথবা স্বাদ গন্ধ চলে গেলে, গাঁটে ব্যথার মতো উপসর্গ থাকলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। কিন্তু যাদের প্রথম পর্যায়ে জ্বর আসে তাদের ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি করণীয় আছে। যেগুলো মেনে চললে অবশ্যই আপনার জ্বর অল্পের থেকে সেরে যাবে।
(১) জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়
বাচ্চা অথবা বড় যে কারোর জ্বর উঠলে অবশ্যই প্যারাসিটামল খেতে পারেন। তবে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কখনই এন্টিবায়োটিক বা অন্য কোন ওষুধ খাওয়া ঠিক নয়। অনেকে আছে আবার মাথা ব্যথার জন্য অ্যাসপিরিনজাতীয় ঔষধ খেয়ে থাকে। এটা কখনোই করা উচিত নয়। বিশেষ করে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ না করে প্যারাসিটামল ছাড়া অন্য কোন ওষুধ খাওয়া উচিত নয়।
(২) কোন জ্বরে কী চিকিৎসা দেবেন
নিয়মিত যদি প্রেসার সুগারের ওষুধ খেয়ে থাকেন তবে সেগুলো বন্ধ করবেন না। প্রয়োজনে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ নিতে পারেন। সারা দিনে অন্তত তিন থেকে চার লিটার তরল জাতীয় খাবার খেতে পারেন। সেটা হতে পারে লিকার চা, ফলের রস, ডাবের জল যা ভালো লাগে তাই খেতে পারেন। আর সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকা উচিত ।
(৩) ১০৫ ডিগ্রি জ্বর হলে করণীয়
মাথা অতিরিক্ত গরম হলে মাথায় জল দিয়ে ধুয়ে ফেলতে পারেন। এবং প্রয়োজনে কপালের জলপট্টি ব্যবহার করতে পারেন ।উট্টিজ্বরের প্রথম অবস্থায় বেশি পাওয়ারফুল ওষুধ খাওয়া উচিত নয়। তবে খাবার-দাবার পেট ভরে খেতে পারেন। এতে আপনার শরীরে দুর্বল এর হাত থেকে রক্ষা পাবে ।
আরো পড়ুন হাড় ক্ষয় প্রতিরোধে করণীয় টিপস
(৪) ১০৩ ডিগ্রি জ্বর হলে করণীয়
পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন। কেননা জ্বর হলে পানিশূন্যতায় বেড়ে যায়। শরীরের তাপমাত্রা যত বেড়ে যায় পানিশূন্যতা ও তত্ত্ব বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও জ্বরের প্রথম পর্যায় ক্ষুধামন্দা ও বমি এ দুটি কারণে শরীরে পানি শূন্যতার ঘাটতি দেখা দেয়। আর যে কারণে শরীরের বিভিন্ন অংশ বিশেষ করে মাংসপেশীতে চিবানোর মতো ব্যথা অনুভূত হতে পারে। রক্তচাপ ও প্রস্রাব কমে যেতে পারে। তাই জ্বরের প্রথম অবস্থায় থেকেই বেশি করে পানি পান করুন।
(৫) মৌসুমের জ্বর
জ্বরের সময় পোশাকের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন। কেননা জ্বরের সময় শরীরে অনেক তাপ থাকে। এ সময় সুতি কাপড় জামা পড়া দরকার। যাতে ভেতরের দিকে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে। এবং সর্বদা খোলামেলা জায়গায় অবস্থান করতে হবে। যাতে আপনার শরীর বাইরের পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিতে পারে।
Disclaimer
জ্বরের প্রথম অবস্থাতে এই টোটকা গুলো ব্যবহার করতে পারবেন। এতে আপনার জ্বরের ভাব অনেকটা কমে যাবে। তবে তিন দিনের বেশি জ্বর হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন এবং ওষুধ খান।