দারুচিনি কেন খাবেন? দারুচিনি খাওয়ার উপকারিতা!
দারুচিনি, যেটা আমাদের সবার পরিচিত একটি মসলা। খাবারের স্বাদ বাড়াতে দারুচিনির বিকল্প আর কিছুই নেই। দারুচিনি ছাড়া খাবারের স্বাদ যেন অসম্পূর্ণ থেকে যায়। আজকের পোস্টে আমরা এই দারুচিনি সম্পর্কে জানব।
দারুচিনি হলো আমাদের এই গ্রহের সবথেকে বেশি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ভেষজগুণে সমৃদ্ধ একটি মসলা। এর ঝাঁঝালো মিষ্টি স্বাদ ও সুন্দর সুগন্ধের জন্য হাজার হাজার বছর ধরে প্রতিটি সংস্কৃতিতে আদৃত হয়ে আসছে। দারুচিনিতে রয়েছে হাজারো পুষ্টিগুণ যা শরীরের বিভিন্ন পুষ্টি চাহিদা পূরণ করে। এটি রক্তের শর্করা রোধ করে।
এটি শুধু রান্নার গন্ধ বৃদ্ধি করে না, শরীর ও ত্বক উভয়ের জন্য দারুচিনি ব্যাপকহারে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
আসুন জেনে নি এর কিছু উপকারিতা!
গাঁটের ব্যাথা
আমাদের ভেতর অনেকেই আছে যারা গাঁটের সমস্যায় ভুগছেন। এক্ষেত্রে দারুচিনি মহৌষধ হিসেবে কাজ করে। উষ্ণ গরম পানির ভিতরে, একটা চামচ মধু আর দারচিনির গুঁড়া ভালোভাবে মিশিয়ে শরীরের ব্যথায় স্থানে মালিশ করলে, এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। তো সে ক্ষেত্রে দুই থেকে তিন দিন আপনি এটি ব্যবহার করতে পারবেন তাহলে আপনার ব্যথা কমে যাবে।
রক্তে এলডিএলের হ্রাস করে!
প্রতিদিন নিয়ম করে আধা চা চামচ দারুচিনির গুড়া সেবন করলে, রক্তের খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে আনবে। প্রতিদিন ২ ইঞ্চি পরিমাণ দারুচিনি ২ কাপ পানিতে জ্বাল দিয়ে সেই পানি ১ কাপ এ করে চায়ের মত পান করলে কোলেস্টেরলের সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। এটি দিনে তিন থেকে চার বার করতে পারেন। ডায়াবেটিসের সমস্যা না থাকলে দারুচিনি পানির সাথে এক চা চামচ মধু মিশিয়ে পান করতে পারেন।
পেটের সমস্যায়!
পেটের সমস্যায় দারুচিনি একটি ওষুধ হিসেবে কাজ করে। একটি এসিডিটির সমস্যা দূর করে, পেটের উপশম করে। যাদের হজমে সমস্যা বা বদহজম হয় তাদের ক্ষেত্রে রাতে শোবার আগে দারুচিনি সঙ্গে হরতকির গুঁড়া মিশিয়ে খেলে দারুন উপকার পাবেন। অ্যাসিডিটির সমস্যায় মধুর সঙ্গে চিনি মিশিয়ে খেলে এসিডিটি সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
শরীরে ছত্রাক জনিত সমস্যা!
অনেকে আছেন যাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছত্রাক জনিত সমস্যা ভুগছেন। তাদের ক্ষেত্রে দারুচিনি একটি আদর্শ সমাধান। এই ছত্রাকজনিত ইনফেকশন প্রতিরোধ করার জন্য, প্রতিদিন গড়ে দুই ইঞ্চি পরিমাণ দারুচিনি ২ কাপ পানি জ্বাল দিয়ে সেই পানি এক কাপে করে চায়ের মত পান করলে এই সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। এটি আপনি দিনে তিনবার করতে পারেন। ছত্রাকে আক্রমণের পরিমাণ বেশি হলে, উক্ত স্থানে গরম পানির ভিতর এক চামচ মধু আর দারুচিনি গুঁড়া ভালোভাবে মিশিয়ে পেস্টের মতো করে উক্ত স্থানে মালিশ করতে পারেন। দুই থেকে তিনবার ভালোভাবে মালিশ করলে কিছু দিনের পর আপনার এ সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।
গলা ব্যাথা ও খুসখুসে কাশিতে এটি আপনি ব্যবহার করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে এক কাপ গরম পানির ভিতর দারুচিনি ও মধু মিশিয়ে সারাদিনে ছয়বার চায়ের মত পান করলে আরাম পাওয়া যাবে। এবং সেইসাথে খুসখুসে কাশি ভাব কমে যাবে।
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে!
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের স্মৃতিশক্তি হ্রাশ পেতে থাকে। এটাই স্বাভাবিক নিয়ম নিয়মিত। প্রতিদিন এক বেলা দুই ইঞ্চি পরিমাণ দারচিনি ১ কাপ গরম পানিতে জাল দিয়ে পান করলে আপনার স্মৃতিশক্তি প্রবনতা হ্রাশ হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে কমে যাবে সেই সাথে আপনার স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পাবে। তবে এটি শিশুদের বেলায় প্রযোজ্য নয়।
আরো পড়ুন
দারুচিনির উপকারিতা ও অপকারিতা
দারুচিনির উপকারিতাদারুচিনির গাছদারুচিনির উপকারিতা ওদারুচিনির চাদারুচিনির দ্বীপদারুচিনির গুড়াদারুচিনির ঔষধি গুনদারুচিনির ব্যবহারদারুচিনির অপকারিতাদারুচিনির ছবিএলাচ লবঙ্গ দারুচিনির উপকারিতাদারুচিনি খাওয়ার নিয়মদারুচিনি গুড়ার উপকারিতারাতে দারুচিনি খাওয়ার উপকারিতা
দারুচিনি খাওয়ার অপকারিতা !
সারাদিনে দুই চামচ এর বেশি দারচিনি খাওয়া যাবেনা। দারুচিনি খাওয়ার কারণে মাথা ধরা ডায়রিয়া সহ বিভিন্ন রোগ সৃষ্টি হতে পারে এবং সেই ক্ষেত্রে যাদের ডায়রিয়া মাথা ধরা ভাব আছে তাদের ক্ষেত্রে দারুচিনি না খাওয়াটাই ভালো। সেই সাথে সতর্ক থাকতে হবে বাজারে দারুচিনি নাম করে অনেক ধরনের গাছের ছাল বিক্রি করা হয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রে কেনার আগে গন্ধ এবং একটু ভেঙে মুখে দিয়ে টেস্ট করে নিতে পারেন। এটি গালে দিলে একটি ঝাঁঝালো মিষ্টি স্বাদ পাওয়া যায় এবং প্যাকেট জাত দারুচিনি পরিহার করুন।
তো বন্ধুরা আশাকরি দারুচিনি সম্পর্কে আপনারা অবগত হয়েছেন এতক্ষণ কষ্ট করে লেখাটা পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। লেখাটি সম্পর্কে কোন মন্তব্য থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। কথা হবে আগামী পোস্টে সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন ।