কয়েক বছর আগে ও দেখা যেতো গ্রামগঞ্জে এই থানকুনি পাতা প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই রোপণ করা হতো। এই থানকুনি পাতা পরবর্তীতে শহরতলীতে বিভিন্ন বাড়িতে লাগানো হতো ।আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে এই পাতার বিভিন্ন গুনাগুন আলোচনা করা হয়েছে এবং অনেক ধরনের ওষুধ তৈরি হতো এই পাতার রস দিয়ে। এমনকি কারোর হাত পা কেটে গেলে বা পেটের কোন সমস্যা হলে এই পাতা মহা ঔষধ হিসেবে কাজ করত। এই পাতার রস যদি প্রতিদিন খাওয়া হয় তাহলে মানসিক দুশ্চিন্তা অনেকাংশে দূর হয়ে যায়। কিন্তু দিন দিন আধুনিকতার ছোঁয়ায মানুষ ভুলতে বসেছে এই পাতার উপকারিতা। বর্তমান সময় অনেকেই আছে এই পাতা ঠিকঠাক চিনেও না।
আজকে আমরা পরিচিত হবো এই থানকুনি পাতার সাথে। থানকুনি পাতার বিভিন্ন উপকারী দিক এবং কিভাবে খেলে কি কাজ করবে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।
ক্ষত নিরাময়ে, কোন কাজ করতে গিয়ে অথবা খেলতে গিয়ে যদি কারোর হাত বা পা কেটে যায় ,তবে দ্রুত রক্ত বন্ধ করার ক্ষেত্রে এই থানকুনি পাতায় কোন বিকল্প নেই ।থানকুনি পাতা তুলে পরিষ্কার জল দিয়ে ধুয়ে তারপর বেটে কাটা জায়গায় লাগিয়ে দিলে তৎক্ষণাৎ রক্ত বের হওয়া বন্ধ হয়ে যাবে। এমনকি ক্ষতস্থানে বিভিন্ন জীবাণু সংক্রমণের আশঙ্কা ও থাকে না। এটি এন্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করে।
সঠিকভাবে রক্তচাপ ঠিক রাখে , যাদের শরীরের থ্রাম্বোসিসের সমস্যা থাকে তাদের ক্ষেত্রে থানকুনি পাতা খুব উপকারী একটা ওষুধ হিসেবে কাজ করে। অনেকের শরীরের বিভিন্ন সমস্যার কারণে রক্ত প্রবাহে সমস্যা সৃষ্টি হয়। এসব মানুষের ক্ষেত্রে থানকুনি পাতার রস সেবন করলে রক্ত শুদ্ধ হয়। ফলে শরীরের প্রতিটি কোষে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত পৌঁছাতে পারে এবং সমস্যা সমাধান হয়। অনেকের হাত বা পা ফুলে যায় তাদের ক্ষেত্রেও এই থানকুনি পাতার রস মহৌষধ হিসেবে কাজ করে। থানকুনি পাতার রস প্রতিদিন সেবন করলে এসব সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
শরীরের ভিতর জ্বালা যন্ত্রণা উপশম করে , অনেক সময় বিভিন্ন কারণে মানুষের শরীরের ভিতরে বিভিন্ন ক্ষতের সৃষ্টি হয়। যার কারণে মানুষের জ্বালা, যন্ত্রণা, জ্বর, ক্লান্তি আসতে পারে। সেই সঙ্গে শরীরের অন্যান্য অঙ্গের প্রচুর ক্ষতি হয়ে থাকে। ক্ষুদাকম লাগা পেশি ব্যথা অনুভব জ্বালাপোড়া মাথা যন্ত্রণা এসব হয়ে থাকে এইসব ক্ষেত্রে থানকুনি পাতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা ওষুধ হিসেবে কাজ করে। থানকুনি পাতার ভিতরে রয়েছে anti-inflammatory. যা খুব তাড়াতাড়ি জ্বালা যন্ত্রণা শরীরে অবসাদ ইত্যাদি কমিয়েে আনে। সেই সাথে শরীরকে সতেজ করে তোলে এই থানকুনি পাতা।
আরো পড়ুন
আলসারের নিরাময় থানকুনি পাতা গুনাগুন.
পেটের যেকোনো সমস্যায় থানকুনি পাতার গুনাগুন অত্যন গুরুত্বপূর্ণ। আমাশয় পেট ব্যাথা বদহজম আলসার এই সবকিছু নিরাময় হয় থানকুনি পাতা সেবনের ফলে।
মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়ায় , নিয়মিত যদি থানকুনি পাতার রস খাওয়া হয়. তাহলে শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং পেন্টাসাক্লিক ট্রিটারপেনস বাড়াতে শুরু করে। যে কারণে মস্তিষ্কের ব্রেন সেল ভালোভাবে কাজ করতে পারে এবং মানুষের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে। সাথে সাথে বুদ্ধির ধারণাও বাড়িয়ে দেয় অনেকাংশে। যে কারণে একসময় ছোট বাচ্চাদের প্রতিদিন নিয়ম করে থানকুনি পাতার রস ক্ষেতে দেওয়া হতো।
সর্বপরি বলা যায় থানকুনি পাতার ভিতর রয়েছে ভেজষ গুন সমৃদ্ধ বিভিন্ন উপাদান।