বহেড়া খাওয়ার উপকারিতা ও বিভিন্ন ঔষধি গুন! বহেড়া কেন খাবেন? এটি খাইলে কি হয়?
আজকে আমরা আলোচনা করব বহেড়া ফল নিয়ে। অনেকেই এই ফলটি হয়তো চিনবেন, আবার অনেকে চিনবেন না। তবে যারা এই ফলটি সম্পর্কে না জানেন তাদের উদ্দেশ্যে আজকের এই পোস্টটি লিখব।
বহেড়া খাওয়ার উপকারিতা ও গুনাগুন
বহেড়াতে রয়েছে বিভিন্ন ঔষধি গুন। এটি একটি ভেজষ গুণসমৃদ্ধ ঔষুধী ফল। বহেড়ার বিজ, ফল ,বাকল প্রায় সবকিছুই মানুষের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আমাদের দেশের প্রায় প্রতিটি জেলাতেই বহেড়া গাছ দেখতে পাওয়া যায় ।যেমন গাজীপুর, কুমিল্লা ,বগুড়া ,দিনাজপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ,রামগড় ইত্যাদি। এবং ভারতের নিকটবর্তী বিহার, হিমালয়, প্রদেশ মধ্যপ্রদেশ, ছোটনাগপুর অঞ্চলে এই গাছগুলো বেশি দেখতে পাওয়া যায়। বহেড়া একটি ত্রিফলা ফল বলা হয়। বহেড়ার বৈজ্ঞানিক নাম Terminalia bellirica. এই ফলে আরেকটি নাম আছে বিভিতকি। কিন্তু এটি বেশিরভাগ অঞ্চলে বহেড়া নামে পরিচিত।
বহেড়ার পরিচিতি
বহেড়া ফল বেশিরভাগ শীতকালে পরিপক্ষ হয়। এই ফল পাকার পরে নিজে থেকেই গাছ থেকে ফল এর বোটা খসে পড়ে যায়। তবেই ফল দুই রকম হয়ে থাকে। এক প্রকার ডিম্বাকৃতি, আরেকটি গোল ।এই বহেড়া গাছের প্রতিটি অংশই যেমন, পাতা, ছাল, ফলের শাঁস, বীজ ,শিখর সবকিছুই ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়।আজকে আমরা এই গাছের এবং ফলের বিভিন্ন উপকারিতা ও গুনাগুন সম্পর্কে জানব।
(১) আমাশয় ও ডায়রিয়া নিরাময়
আমাদের দেশে প্রায় লোকের দেখা যায় এই রোগ। বিভিন্ন ওষুধ খেয়েও অনেকে আমাশা বা ডায়রিয়া থেকে মুক্তি পাচ্ছে না। তো এসব রোগীদের ক্ষেত্রে বহেরা খুবই উপকারী একটি ওষুধ হিসেবে কাজ করবে। বহেড়ার চূর্ণ পানির সাথে মিশিয়ে খেলে দ্রুত এ রোগের উপশম পাওয়া যাবে।
(২) হৃদপিণ্ড ও যকৃত
মানব জীবনের জন্য এই রোগ খুব মারাত্মক একটি রোগ। আর এই রোগ নিরাময়ের জন্য বহেড়া ফল নিয়মিত সেবন করতে হবে। এটি নিয়মিত সেবন করলে হৃদপিণ্ড ও যকৃতের সংক্রমণ অনেক অংশে কমিয়ে আনবে।
(৩) চুলের যত্নে বহেড়া
বর্তমান সময়ে দেখা যায় অধিকাংশ মানুষের অল্প বয়সে চুল পড়ে যায় বা পেকে যায়। এবং এই বিষয় নিয়ে সবাই খুব চিন্তিত থাকে। তো তাদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা সমাধানের সবথেকে সহজ ও কার্যকরী ঔষধ হচ্ছে বহেড়া। এই বহেড়া ফলের ভিতরের বিজ বাদ দিয়ে শুধু মাত্র ১০ গ্রাম ছাল নিয়ে পানি দিয়ে বেটে রস করে ১ কাপ পানিতে মিশিয়ে সেই পানি চুলে মালিশ করলে সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। তবে এটি লাগানোর কিছুক্ষণ পর অবশ্যই পরিষ্কার পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলতে হবে। এভাবে কিছুদিন লাগালেই আপনার চুলের সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।
(৪) কৃমি দমন
কৃমি দমনে এই ফল মহৌষধ হিসেবে কাজ করে। যাদের কৃমি রোগ আছে তাদের বহেড়া বিজের ছাল এর ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। তবে জেনে নিন এটি কিভাবে করবেন। যাদের কৃমি রোগ আছে তাদের ক্ষেত্রে বহেড়া ফলের বিজ এবং শ্বাসের গুঁড়া এবং ডালিম পাতার সাথে মিশিয়ে সেবন করলে কৃমি সংক্রামন রোধ হবে।
(৫) সর্দি কমায়
সর্দি কমানোর ক্ষেত্রে এটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে। বহেড়া চূর্ণ আধা চা-চামচ, সামান্য গরম ঘি এর সাথে মিশিয়ে মধু দিয়ে সেবন করলে দ্রুত সর্দি নিরাময় হয়ে যাবে। সেই সাথে কেউ যদি প্রতিনিয়ত বহেরা ভেজানো পানি ১ কাপ করে পান করে তবে তার শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে তাকে সুস্থতা প্রদান করে। এবং সেইসাথে দীর্ঘায়ু করে। বর্তমানে প্রায় লোকের অনিদ্রায় ভোগেন। ডিপ্রেশন এবং অত্যাধিক দুশ্চিন্তার কারণে এটি বেশি হয়ে থাকে। তো জাদের এই সমস্যাটি আছে তারা এখন থেকে চমৎকার ঘুমের জন্য বহেরা খাওয়ার অভ্যাস করুন।
আরো পড়ুন বেদানা খাওয়ার উপকারিতা
Disclaimer
তো বন্ধুরা এই ছিল আমাদের আজকের আলোচনা ।আশা করি সবাই বহেড়া সম্পর্কে একটু হলেও বুঝতে পারছেন। লেখাটি পড়ে অবশ্যই আপনার মতামত অথবা কোন জিজ্ঞাসা থাকলে কমেন্ট করে জানাবেন ।এতক্ষণ কষ্ট করে লেখাটা পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। কথা হবে পরবর্তী পোস্টে।ধন্যবাদ সবাইকে